বাংলাদেশ খবর ডেস্ক: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশের সর্বকালের রেকর্ড পরিমাণ চাল এ বছর মজুত রয়েছে। এর পরিমাণ ২০ লাখ ১ হাজার ৭০৮ মেট্রিক টন। এরপরও চালের দাম বাড়ছে, এটা কোনো কথা।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চালের অবৈধ মজুদদারির রোধে করণীয় ও বাজার তদারকি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

চালকল মালিক, আড়ৎদার মালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, তিন বছর পর নতুন করে আপনাদের কাছে আমার শিক্ষা নিতে হবে, আমার এ তিন বছর বরবাদ গেল! আমার সারা জীবনের রাজনীতি বরবাদ গেল।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রয়োজন হলে চাল আমদানি করা হবে। ১০ শতাংশ শুল্কহারে আমদানি করা হবে। বোরোতে বাম্পার ফলন হয়েছে, আমনেও হয়েছে, তারপরও চালের দাম বাড়ছে, যা হাস্যকর।

বাজারে চালের অভাব নেই-চাল ভর্তি। কিন্তু দাম কেন বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়ে খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিলের স্টক ভেরিফিকেশন করতে হবে, কতটুকু ক্র্যাসিং হল, কতটুকু সরবরাহ হল তা সপ্তাহ শেষে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, মিল মালিক, ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের মুনাফা কম করে দেশের মানুষের প্রতি মানবিক হতে হবে।

কারা ধান চাল মজুত করছে জানতে চেয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি জেনে থাকেন কারও কাছে অবৈধ মজুত আছে, তার তথ্য দিন। তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন-ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মিল মালিকদের পক্ষে নিরদ বরণ সাহা বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ছে, পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে। চার হাত বদল হয়ে চালের দাম বাড়লেও মোকামে চালের দাম খুব বেশি বাড়েনি। খুচরা বিক্রেতারা চালের দাম বেশি বাড়াচ্ছে। করোনাকালে অনেক অলস অর্থ তৈরি হয়েছে। এসব অর্থ দিয়ে ধান চাল কিনে মজুত করে রাখা হচ্ছে, বন্ধ অনেক মিলেও চাল কিনে রাখা হচ্ছে। অবৈধ মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

মিল মালিক বেলাল হোসেন বলেন, অপরিকল্পিত মজুতের কারণে চালের দাম বাড়ছে। ধান চালের ব্যবসার অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা ধান চাল নষ্ট করে ফেলে যা জাতীয় সম্পদের অপচয়।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোসাম্মৎ নাজমানারা খানুম, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল বাতেন, আরএমপি’র কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক পাটোয়ারি ও বগুড়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশ্রাফুজ্জামান।