বাংলাদেশ খবর ডেস্ক: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি চলতি বছরের মধ্যে শেষ হবে। আগামী বছর (২০২৩) বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন।

তথ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে চট্টগ্রাম নগরের পরিবহন মাস্টার প্ল্যানসহ মেট্রোরেলের সমীক্ষার জন্য প্রিলিমিনারি সার্ভে কাজ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা ও প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সংস্থা কোইকা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে। এ কাজে মোট ৭০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে কোইকো ৫১ কোটি টাকা ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২০ কোটি টাকা দেবে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে কলকাতার পর চট্টগ্রামই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মেট্রোরেল যেতে পারে। এছাড়া নদীর ওপাড়ে কীভাবে মেট্রোরেল নিয়ে যাওয়া যায় এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সারাদেশে ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ চলছে। দেশ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে। শিল্পখাতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেটি বাস্তবায়নের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিজের হাতে তুলে নেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী । সেটি শুধু ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আজকে চট্টগ্রামকে ঘিরে যেভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে, মেট্রোরেল স্থাপনের জন্য যে ঘোষণা দেওয়ায় এটি স্পষ্ট যে, তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের দ্বিগুণ সক্ষমতা নিয়ে বে-টার্মিনাল হচ্ছে, এটি একটা রিজিওনাল বন্দর হবে। এর পাশাপাশি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, সব মিলিয়ে আগামী ১০ বছর চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অনেক দ্রুত হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরে আমাদের দেশে জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ছিল ৭ শতাংশ প্লাস। আজ কৃষিখাতের অবদান ১২ থেকে ১৩ শতাংশ। শিল্পখাতের অবদান ছিল ৬ থেকে ৭ শতাংশ। আর এখন শিল্পখাতের অবদান ৪০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দেশ শিল্পোন্নত হচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে আমাদের শিল্পখাতের অবদান আরো বাড়বে। অর্থাৎ শিল্পোন্নত দেশে যা হয় সেই পরিস্থিতি দাঁড়াবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রতিষ্ঠায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুরু থেকে উদ্যোগী ছিলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল মালেক, যুগ্ম সচিব মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম শাহজাহান প্রমুখ।